শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Sumit | ০৫ মে ২০২৪ ১৪ : ১৩Sumit Chakraborty
বিভাস ভট্টাচার্য
তিনবারের সাংসদ, বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা.কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বারাসত লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারের ভোটেও তাঁকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এলাকায় বিজেপির উত্থান থেকে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। কী জানালেন কাকলি?
* ২০১৪ সালে বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে ফলাফলের ভিত্তিতে বিজেপি তৃতীয় স্থানে ছিল। ২০১৯-এ দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল। এটা কি বিজেপির উত্থান না তৃণমূলের ব্যর্থতা?
কাকলি: ভুয়ো সংবাদ এবং ধর্মান্ধতা মানুষকে প্রকৃত অর্থে অন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের সব জায়গাতেই এই ঘটনা ঘটছে। না হলে এই ধরনের একটি বিভেদকামী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি দেশে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসে না। ভারতের সংহতি, সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন করে যারা চলছে তারা দ্বিতীয়বার আসতে পারে না। যে হাওয়ায় ভর করে তারা দ্বিতীয়বার এসেছে, সেই একই হাওয়ায় ভর করে তারা এখানেও এসেছিল। কিন্তু এবারে সেটা স্তিমিত।
* এই কেন্দ্রে মধ্যমগ্রাম, দেগঙ্গা-সহ আরও কয়েকটি জায়গায় আইএসএফ গত পঞ্চায়েত ভোটে উঠে এসেছে। লোকসভা নির্বাচনে তারা প্রার্থীও দিয়েছে। যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা জায়গা করে নিয়েছে সেই একইভাবে কি লোকসভা নির্বাচনেও তারা ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারে?
কাকলি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওগুলো হয়। ব্যক্তি স্বার্থ এবং পঞ্চায়েতের ইস্যুগুলি সেখানে কাজ করে। ধরুন একটা বুথে হাজার মানুষ এবং ২০০-২৫০ বাড়ি। তাঁদের ব্যক্তি স্বার্থ। সেখানে থাকতে পারে কারুর হিংসা বা রাগ। আর সংসদীয় রাজনীতিটা হয় অনেক বড় আকারে। ইস্যুগুলো থাকে অনেক বড়। সেখানে একজন সদস্য তো সেই কাজগুলো করতে পারবেন না। বা কোনও একটা কাজ যেটা রাজ্য সরকারকে দিয়ে করিয়ে আনতে হবে সেটা তো সেই সদস্য পারবেন না। ফলে তখন মানুষ বুঝে যান এই কাজটা কে করতে পারবেন এবং তাঁর দিকেই তাঁরা ঝোঁকেন। ফলে এবারে কিন্তু আমি বিরাট ভোটের ব্যবধানেই জিতব।
* কাছেই কামদুনি। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল অভিযোগ করছে সুজেট বা কামদুনি, বিশেষ করে কামদুনিতে ওইরকম নারী নির্যাতনের ঘটনার পরেও আপনি নীরব ছিলেন। আপনি নিজে কী বলছেন?
কাকলি: প্রথমত কামদুনি আমার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে না। জায়গাটা বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেখানে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে আমিও গেছিলাম। এমনকী যেদিন ঘটনাটি ঘটেছিল, সেদিনও আমি গেছিলাম। ওঁদের বাড়ি গিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা, ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। মনে রাখতে হবে জায়গাটা যেহেতু আমার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে না তাই আমি কিন্তু বেশি নাক গলাতে পারি না। এটাই সংসদীয় রীতিনীতি। বিরোধীরা যাঁরা এটা বলছেন তাঁরা এটা জানেন না বলেই মুর্খের মতো বলছেন।
* এই লোকসভা কেন্দ্রে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক আছেন। এঁদের জন্য আলাদা করে কিছু ভাবছেন?
কাকলি: অনেক নয়, দেগঙ্গাতে কিছু আছেন। করোনার সময় যে সমস্ত শ্রমিকরা হায়দরাবাদে ছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে আমি ১৫ দিন ধরে খাবার পাঠানো ছাড়াও তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। শ্রমিকদের ফিরে আসার বন্দোবস্ত করেছি। এঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমার ফোনে যোগাযোগ ছিল।
* এলাকার বন্ধ কল কারখানা, উদাহরণ হিসেবে বলছি অশোকনগরে একটা স্পিনিং মিল বন্ধ হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। শোনা গিয়েছে ওখানে কিছু একটা "হাব" হবে। কাজ কতদূর হল?
কাকলি: অশোকনগরের কারখানাটা নিয়ে বলছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ওই কারখানায় যে হাব তৈরি করছেন সেখানে শাঁখা-পলা তৈরির পাশাপাশি গয়নার বাক্সও তৈরি হবে।
* আপনি আগামীদিনে এলাকার জন্য বিশেষ কিছু পরিকল্পনা কি করেছেন?
কাকলি: এলাকার উন্নয়নের জন্য কোনও কাজ বাকি নেই। গত ১৫ বছর ধরে সেটাই করা হয়েছে। এবার আমার ইচ্ছা আছে বারাসতে একটা হকার্স মার্কেট তৈরি করা। আরেকটা কাজ আমি ভেবে রেখেছি পড়াশোনা করা এবং চাকরি করা মেয়েদের জন্য হস্টেল তৈরি করা।
* প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কিছু বলবেন?
কাকলি: আমার রুচিতে বাধে। আমার এবং আমার পরিবারের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও আমার জনদরদী ভাবমূর্তি রয়েছে। সেখানে এঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে আমার রুচিতে বাধে।